Wikipedia

Search results

Monday, 13 April 2020

করোনা ভাইরাসের টিকার জন্য অপেক্ষা ১০ মাস

আন্তজার্তিক:জার্মানিতে করোনায় একদিনে আরও ১৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৩০ জনে। আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১ লাখ ২৮ হাজার।
জার্মানিতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ২৮ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তবে আশার কথা হচ্ছে, ৬২ হাজারেরও বেশি মানুষ সুস্থ হয়ে গেছেন।
এদিকে জার্মানের একটি ভ্যাকসিন তৈরির প্রতিষ্ঠান করোনা ভাইরাসের টিকা তৈরি কাজ করে যাচ্ছে। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী জুন-জুলাইয়ে যে কোন একটি প্রাণীর উপর সেটি পরীক্ষা করা হবে।
এর পরে ১০০ মানুষের উপর এর পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হবে। সব কিছু ঠিক থাকলে ২০২১ সালে ফেব্রুয়ারিতে মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাবে এই টিকা। এমনটাই জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
এদিকে, ধীর গতিতে কাজ অগ্রগতির কারণে এখানে ৮০ মিলিয়ন ইউরো দিচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এবং ১৪ কোটি ইউরো দিচ্ছে জার্মান সরকার।

Saturday, 11 April 2020

করোনায় নামাজের ব্যাপারে মুসলিম দেশগুলো যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে

ইসলামিক:প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) ঠেকাতে ফতোয়া জারি করে সরকারগুলোর পাশে দাঁড়িয়েছে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো। দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোতেও দেখা যাচ্ছে একই চিত্র। ফতোয়া জারি করে সরকারগুলোকে সহযোগিতা করছে ধর্মীয় সংস্থাগুলো।

মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় সিদ্ধান্তটি নেয় সৌদি আরব, মক্কায় ওমরাহ বন্ধ করে দেয়ার মধ্য দিয়ে।

করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় নানা দেশে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কিছু সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে। সামাজিক মেলামেশার ক্ষেত্রে আরোপ করা হয়েছে বিধিনিষেধ। অফিস, দোকানপাট, রেস্টুরেন্ট, ক্লাব, শপিংমল থেকে শুরু করে বড় জমায়েত হয় এমন সব কর্মকাণ্ড বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সেই বিধিনিষেধের আওতায় পড়েছে মসজিদের জামায়াতে নামাজ আদায়। ইউরোপ-আমেরিকায় তো বটেই আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ার দেশগুলোও বাদ পড়ছে না।

পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি মুসলিম অধ্যুষিত দেশ ইন্দোনেশিয়া থেকে শুরু করে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারগুলো নানা ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। কোথাও কোথাও সরকার নয়, বরং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো এসব বিধিনিষেধের দায়িত্ব নিয়েছে৷

আফগানিস্তান

নামাজের জন্য মসজিদে না যেতে ফতোয়া জারি করেছেন আফগানিস্তানের ধর্মীয় নেতারা, এমনটি জানিয়েছে দেশটির অন্যতম টিভি চ্যানেল টোলো নিউজ। দেশটির উলামা হাই কমিশন এই ফতোয়া জারি করেছে। কমিশন এর কারণ হিসেবে বলেছে, আফগানিস্তান নতুন করোনাভাইরাসটি থেকে পুরোপুরি মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের ধর্মীয়, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক জমায়েত বন্ধ থাকবে।

এর আগে, দেশটির হজ ও ধর্ম মন্ত্রণালয় মসজিদে জুমা ও অন্য নামাজের জামাতে লোকজনের জমায়েত নিষিদ্ধ করে। মন্ত্রণালয় ও কমিশনের সদস্যরা সবাইকে ঘরে নামাজ পড়ার আহ্বান জানান। ধর্মীয় নেতারা বলেন, কোরআন ও হাদিসের আলোকে স্বাস্থ্যগত দিক চিন্তা করে এ সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে।

এমনকি ফতোয়ায় ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা গেলে মৃতের সৎকারেও কম মানুষের উপস্থিতিতে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়ার করার কথা বলা হয়েছে।

ইন্দোনেশিয়া

সবচেয়ে বড় মুসলিম অধ্যুষিত দেশ ইন্দোনেশিয়া। সেখানে সরকার সরাসরি কোন নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি। কিন্তু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো এরইমধ্যে সেই কাজটি করছে। দেশটির সবচেয়ে বড় ইসলামি সংগঠন নাহদলাতুল উলামা করোনার বিস্তার রোধে ফতোয়া জারি করেছে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম টিভি ওয়ানে সংস্থাটির র পরিচালক ড. সাইদ আকিল সিরোজ বলেছেন, ‘করোনার বিস্তার ঠেকাতে আমরা সব মুসলিমের কাছে এ আহ্বান জানাই, আপনারা জুমা ও তারাবির নামাজ এবং ঈদ উল ফিতরের সব উদযাপন ঘরে বসে করুন।

কোভিড-১৯ থেকে রক্ষা পেতে নাহদলাতুল উলামার ফতোয়া কাউন্সিল কিছু ধর্মীয় নির্দেশনা প্রকাশ করেছে। সেসব রীতিমালা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সেখানে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতদের দাফন কেমন করে করা হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত বলা রয়েছে।

ভারত

মার্চে ভারতের একেকটি রাজ্য সরকার এক এক করে করোনা মোকাবেলায় সামাজিক জমায়েতের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করতে থাকে।

দিল্লিতে বিধিনিষেধ আরোপের আগে নিজামুদ্দিন এলাকায় তাবলিগ জামাতের ধর্মীয় জমায়েত অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে অংশ নেন প্রায় দুই হাজার তাবলিগ অনুসারী। এদের মধ্যে অনেকেই করোনায় আক্রান্ত হন এবং মারাও যান।

দিল্লি সরকার ১৬ মার্চ প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে ৫০ জনের বেশি মানুষ জড়ো হওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল, যা পরবর্তীতে কমিয়ে পাঁচজনে নামিয়ে আনা হয়। মোটামুটি সারাদেশেই একসঙ্গে পাঁচজনের বেশি জমায়েত হতে পারবেন না বলে নিয়ম করে দেয়া হয়েছে। আলাদা করে না হলেও এই বিধিনিষেধ ধর্মীয় জমায়েতের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। জনগণ এই বিধিনিষেধ মানছেন কি না তা দেখতে রাস্তায় পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী রয়েছে।

পাকিস্তান

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান মসজিদে জড়ো হওয়ার সংখ্যা সীমিত করার কথা বলেছেন। দেশটির ইসলামিক আদর্শ কাউন্সিল সবাইকে বাসায় থাকার পরামর্শ দিয়েছে। ঘরেই নামাজ আদায়ের কথা বলেছে। কোন কোন প্রদেশ নিজ দায়িত্বে কড়াকড়ি আরোপ করেছে। যেমন, দক্ষিণাঞ্চলের সিন্ধ প্রদেশে গেল শুক্রবার জুমার নামাজে মানুষের আসা ঠেকাতে দুপুর বারটা থেকে তিনটা পর্যন্ত পূর্ণ লকডাউন ঘোষণা করা হয়। এ সময় রাস্তায় যে কাউকে দেখলেই গ্রেফতার করা হয়।

পাঞ্জাব প্রদেশে, যেখানে দেশটির ২২ কোটি জনগণের ৬০ ভাগের বাস, বড় শহরগুলোর মোড়ে মোড়ে চেকপয়েন্ট বসানো হয়েছে, যেন মানুষ জড়ো হতে না পারেন। তারপরও সেখানে মানুষ কথা শুনছেন না। অনেক ধর্মীয় নেতা এখনো লকডাউনের বিপক্ষে কথা বলে যাচ্ছেন। খবর'র এপি।


বাংলাদেশ

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের দ্রুত সংক্রমণ ছড়ানো রুখতে মুসল্লিদের ঘরে নামাজ পড়ার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। সোমবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদেরও ঘরে উপাসনার নির্দেশ দেয়া হয়। শুধু মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন আর খাদেমরা মসজিদে নামাজ আদায় করবেন। বাইরের মুসল্লিরা কেউ মসজিদে জামাতে অংশ নিতে পারবেন না।

সংখ্যার হিসেবে বলা হয়েছে, জুম্মার নামাজে সর্বোচ্চ ১০ জন এবং দৈনিক পাঁচওয়াক্ত নামাজে সর্বোচ্চ পাঁচজন উপস্থিত হতে পারবেন। কেউ এই নির্দেশ অমান্য করে মসজিদে নামাজ পড়লে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ব্যবস্থা নেবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

এছাড়া অন্যান্য ধর্মের অনুসারীদেরও উপাসনালয়ে সমবেত না হয়ে নিজ নিজ বাসায় উপাসনা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে৷
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ইসলামিক ফাউন্ডেশন শবে বরাতের রাতে বাসায় বসে প্রার্থনা করার আহ্বান জানিয়েছে৷

মধ্যপ্রাচ্যে আরো আগে থেকে

ইরানে কোভিড-১৯ ভাইরাসটি ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ার পর সতর্ক হয়ে গেছে মধ্যপ্রাচ্য। তারা নানাভাবে বড় সমাবেশ বা জমায়েত বন্ধ করার উদ্যোগ নিতে শুরু করে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় সিদ্ধান্তটি নেয় সৌদি আরব, মক্কায় ওমরাহ বন্ধ করে দেয়ার মধ্য দিয়ে৷ একে একে মধ্যপ্রাচ্যের অন্য দেশগুলোও উদ্যোগ নিতে শুরু করে৷

কুয়েতে আযানের মধ্যে কিছুটা পরিবর্তন এনে ঘরে বসে নামাজ আদায়ের কথা বলা হয়৷ এমন বিরল ক্ষেত্রে ব্যবহৃত ঐতিহাসিক উদাহরণকে অনুসরণ করা হয়েছে বলে বলা হয়।

ইরাকের গ্র্যান্ড আয়াতোল্লাহ আলি আল-সিস্তানি এ বিষয়ে বলেন, পেশাদার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ধর্মীয় দায়িত্ব। তুরস্কের ধর্ম বিভাগের প্রেসিডেন্ট আলি এরবাস মহামারী থেকে বাঁচতে মহানবীর শিক্ষাকে অনুসরণ করার কথা বলেন।

মিশর রমজান মাসে যে কোন ধর্মীয় সমাবেশ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে। এমনকি ইফতার পার্টি বা জমায়েত করা যাবে না বলে জানিয়েছে তাদের ধর্ম মন্ত্রণালয়। সূত্র : ডয়চে ভেলে।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) ঠেকাতে ফতোয়া জারি করে সরকারগুলোর পাশে দাঁড়িয়েছে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো। দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোতেও দেখা যাচ্ছে একই চিত্র। ফতোয়া জারি করে সরকারগুলোকে সহযোগিতা করছে ধর্মীয় সংস্থাগুলো। মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় সিদ্ধান্তটি নেয় সৌদি আরব, মক্কায় ওমরাহ বন্ধ করে দেয়ার মধ্য দিয়ে। করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় নানা দেশে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কিছু সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে। সামাজিক মেলামেশার ক্ষেত্রে আরোপ করা হয়েছে বিধিনিষেধ। অফিস, দোকানপাট, রেস্টুরেন্ট, ক্লাব, শপিংমল থেকে শুরু করে বড় জমায়েত হয় এমন সব কর্মকাণ্ড বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সেই বিধিনিষেধের আওতায় পড়েছে মসজিদের জামায়াতে নামাজ আদায়। ইউরোপ-আমেরিকায় তো বটেই আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ার দেশগুলোও বাদ পড়ছে না। পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি মুসলিম অধ্যুষিত দেশ ইন্দোনেশিয়া থেকে শুরু করে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারগুলো নানা ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। কোথাও কোথাও সরকার নয়, বরং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো এসব বিধিনিষেধের দায়িত্ব নিয়েছে৷ আফগানিস্তান নামাজের জন্য মসজিদে না যেতে ফতোয়া জারি করেছেন আফগানিস্তানের ধর্মীয় নেতারা, এমনটি জানিয়েছে দেশটির অন্যতম টিভি চ্যানেল টোলো নিউজ। দেশটির উলামা হাই কমিশন এই ফতোয়া জারি করেছে। কমিশন এর কারণ হিসেবে বলেছে, আফগানিস্তান নতুন করোনাভাইরাসটি থেকে পুরোপুরি মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের ধর্মীয়, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক জমায়েত বন্ধ থাকবে। এর আগে, দেশটির হজ ও ধর্ম মন্ত্রণালয় মসজিদে জুমা ও অন্য নামাজের জামাতে লোকজনের জমায়েত নিষিদ্ধ করে। মন্ত্রণালয় ও কমিশনের সদস্যরা সবাইকে ঘরে নামাজ পড়ার আহ্বান জানান। ধর্মীয় নেতারা বলেন, কোরআন ও হাদিসের আলোকে স্বাস্থ্যগত দিক চিন্তা করে এ সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে। এমনকি ফতোয়ায় ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা গেলে মৃতের সৎকারেও কম মানুষের উপস্থিতিতে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়ার করার কথা বলা হয়েছে। ইন্দোনেশিয়া সবচেয়ে বড় মুসলিম অধ্যুষিত দেশ ইন্দোনেশিয়া। সেখানে সরকার সরাসরি কোন নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি। কিন্তু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো এরইমধ্যে সেই কাজটি করছে। দেশটির সবচেয়ে বড় ইসলামি সংগঠন নাহদলাতুল উলামা করোনার বিস্তার রোধে ফতোয়া জারি করেছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম টিভি ওয়ানে সংস্থাটির র পরিচালক ড. সাইদ আকিল সিরোজ বলেছেন, ‘করোনার বিস্তার ঠেকাতে আমরা সব মুসলিমের কাছে এ আহ্বান জানাই, আপনারা জুমা ও তারাবির নামাজ এবং ঈদ উল ফিতরের সব উদযাপন ঘরে বসে করুন। কোভিড-১৯ থেকে রক্ষা পেতে নাহদলাতুল উলামার ফতোয়া কাউন্সিল কিছু ধর্মীয় নির্দেশনা প্রকাশ করেছে। সেসব রীতিমালা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সেখানে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতদের দাফন কেমন করে করা হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত বলা রয়েছে। ভারত মার্চে ভারতের একেকটি রাজ্য সরকার এক এক করে করোনা মোকাবেলায় সামাজিক জমায়েতের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করতে থাকে। দিল্লিতে বিধিনিষেধ আরোপের আগে নিজামুদ্দিন এলাকায় তাবলিগ জামাতের ধর্মীয় জমায়েত অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে অংশ নেন প্রায় দুই হাজার তাবলিগ অনুসারী। এদের মধ্যে অনেকেই করোনায় আক্রান্ত হন এবং মারাও যান। দিল্লি সরকার ১৬ মার্চ প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে ৫০ জনের বেশি মানুষ জড়ো হওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল, যা পরবর্তীতে কমিয়ে পাঁচজনে নামিয়ে আনা হয়। মোটামুটি সারাদেশেই একসঙ্গে পাঁচজনের বেশি জমায়েত হতে পারবেন না বলে নিয়ম করে দেয়া হয়েছে। আলাদা করে না হলেও এই বিধিনিষেধ ধর্মীয় জমায়েতের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। জনগণ এই বিধিনিষেধ মানছেন কি না তা দেখতে রাস্তায় পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী রয়েছে। পাকিস্তান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান মসজিদে জড়ো হওয়ার সংখ্যা সীমিত করার কথা বলেছেন। দেশটির ইসলামিক আদর্শ কাউন্সিল সবাইকে বাসায় থাকার পরামর্শ দিয়েছে। ঘরেই নামাজ আদায়ের কথা বলেছে। কোন কোন প্রদেশ নিজ দায়িত্বে কড়াকড়ি আরোপ করেছে। যেমন, দক্ষিণাঞ্চলের সিন্ধ প্রদেশে গেল শুক্রবার জুমার নামাজে মানুষের আসা ঠেকাতে দুপুর বারটা থেকে তিনটা পর্যন্ত পূর্ণ লকডাউন ঘোষণা করা হয়। এ সময় রাস্তায় যে কাউকে দেখলেই গ্রেফতার করা হয়।  পাঞ্জাব প্রদেশে, যেখানে দেশটির ২২ কোটি জনগণের ৬০ ভাগের বাস, বড় শহরগুলোর মোড়ে মোড়ে চেকপয়েন্ট বসানো হয়েছে, যেন মানুষ জড়ো হতে না পারেন। তারপরও সেখানে মানুষ কথা শুনছেন না। অনেক ধর্মীয় নেতা এখনো লকডাউনের বিপক্ষে কথা বলে যাচ্ছেন। খবর'র এপি। বাংলাদেশ বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের দ্রুত সংক্রমণ ছড়ানো রুখতে মুসল্লিদের ঘরে নামাজ পড়ার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। সোমবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদেরও ঘরে উপাসনার নির্দেশ দেয়া হয়। শুধু মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন আর খাদেমরা মসজিদে নামাজ আদায় করবেন। বাইরের মুসল্লিরা কেউ মসজিদে জামাতে অংশ নিতে পারবেন না। সংখ্যার হিসেবে বলা হয়েছে, জুম্মার নামাজে সর্বোচ্চ ১০ জন এবং দৈনিক পাঁচওয়াক্ত নামাজে সর্বোচ্চ পাঁচজন উপস্থিত হতে পারবেন। কেউ এই নির্দেশ অমান্য করে মসজিদে নামাজ পড়লে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ব্যবস্থা নেবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এছাড়া অন্যান্য ধর্মের অনুসারীদেরও উপাসনালয়ে সমবেত না হয়ে নিজ নিজ বাসায় উপাসনা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে৷ বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ইসলামিক ফাউন্ডেশন শবে বরাতের রাতে বাসায় বসে প্রার্থনা করার আহ্বান জানিয়েছে৷ মধ্যপ্রাচ্যে আরো আগে থেকে ইরানে কোভিড-১৯ ভাইরাসটি ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ার পর সতর্ক হয়ে গেছে মধ্যপ্রাচ্য। তারা নানাভাবে বড় সমাবেশ বা জমায়েত বন্ধ করার উদ্যোগ নিতে শুরু করে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় সিদ্ধান্তটি নেয় সৌদি আরব, মক্কায় ওমরাহ বন্ধ করে দেয়ার মধ্য দিয়ে৷ একে একে মধ্যপ্রাচ্যের অন্য দেশগুলোও উদ্যোগ নিতে শুরু করে৷ কুয়েতে আযানের মধ্যে কিছুটা পরিবর্তন এনে ঘরে বসে নামাজ আদায়ের কথা বলা হয়৷ এমন বিরল ক্ষেত্রে ব্যবহৃত ঐতিহাসিক উদাহরণকে অনুসরণ করা হয়েছে বলে বলা হয়। ইরাকের গ্র্যান্ড আয়াতোল্লাহ আলি আল-সিস্তানি এ বিষয়ে বলেন, পেশাদার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ধর্মীয় দায়িত্ব। তুরস্কের ধর্ম বিভাগের প্রেসিডেন্ট আলি এরবাস মহামারী থেকে বাঁচতে মহানবীর শিক্ষাকে অনুসরণ করার কথা বলেন। মিশর রমজান মাসে যে কোন ধর্মীয় সমাবেশ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে। এমনকি ইফতার পার্টি বা জমায়েত করা যাবে না বলে জানিয়েছে তাদের ধর্ম মন্ত্রণালয়। সূত্র : ডয়চে ভেলে

বিএমএসএফ) কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আহমেদ আবু জাফরকে মোবাইল ফোনে হুমকি

বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের (বিএমএসএফ) কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আহমেদ আবু জাফরকে মোবাইল ফোনে হুমকি প্রদান করেছে। আজ শুক্রবার রাত ৮টা ১৮ মিনিটে ০১৬৪৮১০৯১১২ নাম্বার থেকে তার ০১৭১২৩০৬৫০১ ব্যবহৃত নাম্বারে ফোন করে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে জীবননাশের হুমকি প্রদান করে। ৪৯ সেকেন্ডের এ কথোপকথনে হুমকিদাতা নানা অশালীন কথাবার্তা বলে হুমকি দেয়। এ ঘটনায় আইননানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

জনাব আবু জাফর জানান, সম্প্রতি দেশে অব্যাহত সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় বিএমএসএফ নানাভাবে প্রতিবাদ করে আসছে। এ কারনে হয়তো কোন পক্ষ তাকে হুমকি দিতে পারেন। বিষয়টি প্রশাসনকে অবহিত করা হচ্ছে।
এ ঘটনায়  বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে হুমকিদাতাকে খুঁজে বের করার জন্য প্রশাসনের নিকট আহবান জানানো হয়। বর্তমানে তিনি মহামারী করোনা ইস্যুতে নিজ জেলা ঝালকাঠিতে অবস্থান করছেন।
তিনি স্থানীয় গণমানুষের সংগঠন ঝালকাঠি নাগরিক ফোরামেরও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।
বিএমএসএফ'র পক্ষ থেকেনিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

Thursday, 9 April 2020

করোনা কেড়ে নিল অলিম্পিক ফাইনালিস্টের প্রাণ

খেলার সংবাদ:প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সঙ্গে দৌড়ে জিততে পারলেন না ইতালির দৌড়বিদ, অলিম্পিক ফাইনালিস্ট দোনাতো সাবিয়া।
করোনার কাছে হার মেনে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করতে হলো এই এথলেটকে।
করোনা কেড়ে নিল অলিম্পিক ফাইনালিস্টের প্রাণ

করোনায় বিধ্বস্ত ইতালিতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে বুধবার নিশ্চিত করেছে ইতালিয়ান অলিম্পিক কমিটি।
এক বিবৃতিতে ইতালিয়ান অলিম্পিক কমিটি জানায়, চলমান করোনা বিস্তারের মাঝে আক্রান্ত হন দৌড়বিদ সাবিয়া। এরপর তাকে পোটেনজার সান কারলো হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বেশ কয়েকদিন ধরে আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল তাকে। বুধবার মারা যান সাবিয়া। তার বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর। তার মৃত্যুতে অলিম্পিক কমিটি গভীর শোক প্রকাশ করছে।
কয়েকদিন আগে করোনায় আক্রান্ত হয়ে সাবিয়ার বাবাও মারা যান বলে জানিয়েছে ইতালিয়ান অলিম্পিক কমিটি।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম কোনা অলিম্পিয়ান মারা গেলেন।
১৯৮৪ সালে ইউরোপিয়ান ইনডোর চ্যাম্পিয়নশিপে ৮০০ মিটারে স্বর্ণ জিতেছিলেন সাবিয়া। ইতালির হয়ে দুইবার অলিম্পিকের চূড়ান্ত পর্বে অংশ নিতে পেরেছিলেন তিনি। ১৯৮৪ সালের লস এঞ্জেলস অলিম্পিকে ৮০০ মিটারের ইভেন্টে পঞ্চম হয়েছিলেন। পরের আসরে সপ্তম হন।
করোনার থাবায় মৃত্যুপুরীতে পরিণত গোটা ইতালি। আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্যানুযায়ী, এ পর্যন্ত দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪২২ জন। মারা গেছেন ১৭ হাজার ৬৬৯ জন। সুস্থ হয়েছেন ২৬ হাজার ৪৯১ জন।

ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের অভিযান স্থগিত

আন্তজার্তিক:
ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের অভিযান স্থগিত
 ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের অভিযান স্থগিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে সৌদি কর্তৃপক্ষ।
পাঁচ বছরব্যাপী যুদ্ধ থামাতে জাতিসংঘের প্রয়াসে সাড়া দিয়ে বৃহস্পতিবার থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা হবে বলে বিবিসি জানতে পেরেছে।


ইরান সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সৌদি নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সেনা সমর্থিত জোটের অভিযান শুরু হয় ২০১৫ সালে।


তবে হুতি বাহিনী এই যুদ্ধবিরতির শর্ত মানবে কিনা, তা এখনও পরিস্কার নয়।


গতমাসে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস ইয়েমেনে অবস্থানরতদের আহ্বান জানান অতিসত্ত্বর যুদ্ধ থামাতে এবং করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব ঠেকানোর লক্ষ্যে পদক্ষেপ নিতে।


দেশজুড়ে যুদ্ধকালীন সহিংসতা নিরসনের লক্ষ্যে জাতিসংঘের বিশেষ দূত মার্টিন গ্রিফিথসের সাথে সব পক্ষের সমন্বয় করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব।


বুধবার মার্টিন গ্রিফিথস যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।


তিনি বলেন, "সব পক্ষকে এখন এই সুযোগ গুরুত্বের সাথে ব্যবহার করতে হবে এবং সব ধরণের সহিংসতা বন্ধ করতে হবে।"


যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনা করতে দুই পক্ষেরই ভিডিও কনফারেন্সে আলোচনা করার কথা।


যুদ্ধবিরতিতে সব ধরণের বিমান, স্থল এবং নৌ সহিংসতা বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয়।


যৌথবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়: "জাতিসংঘের দূতের চেষ্টায় এবং ইয়েমেনিদের দুর্ভোগ লাঘবের লক্ষ্যে ও করোনাভাইরাস মহামারি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় বৃহস্পতিবার থেকে শুরু করে দুই সপ্তাহের জন্য যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করছে জোট।"


ইয়েমেনের পরিস্থিতিকে বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছিল।


ঐ যুদ্ধে অনেক বেসামরিক নাগরিক মারা গেছে এবং ইয়েমেনকে ভয়াবহ পরিস্থিতিতে ফেলেছে।


হুতিদের মুখপাত্র মোহাম্মদ আব্দুসসালাম জানিয়েছেন তারা জাতিসংঘকে তাদের লক্ষ্য সম্পর্কে অবহিত করেছে। তারা চায় যুদ্ধ এবং ইয়েমেনের 'অবরুদ্ধ অবস্থা'র সমাপ্তি।


আরো পড়তে পারেন:


সৌদি আরবে কি পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে


যে কারণে সৌদি আরব ছাড়তে চান অনেক তরুণী

ইয়েমেন সংকট: কে কার সঙ্গে কেন লড়াই করছে?

সমঝোতা সত্ত্বেও যুদ্ধ চলছে ইয়েমেনে


গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ

ইয়েমেনে চলমান ব্যয়বহুল সৌদি নেতৃত্বাধীন অভিযান শেষ করার পথে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ সৌদি আরবের এই যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব।

জোটের বিবৃতিতে উঠে আসে যে করোনাভাইরাসের আশঙ্কার কারণেই এই যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব করা হয়েছে। সৌদি আরবের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার নাজুক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।


গত সেপ্টেম্বরে সৌদি আরবের তেল সম্পদের ওপর হামলা হওয়ার পরও হুতি নেতাদের সাথে গোপনে আলোচনা করার চেষ্টা করেছিল সৌদি কর্তৃপক্ষ। সেসময় হামলার দায় চাপানো হয় ইরানের ওপর।
তবে গত কয়েকমাসে হুতি বাহিনী সেনা কার্যক্রম বাড়িয়েছে।
বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া খবরে জানা যায় হুতি নেতারাও আলোচনা সাপেক্ষে যুদ্ধের সমাপ্তি চায়। কিন্তু একইসাথে সশস্ত্র যুদ্ধেও তারা পিছপা হতে চাচ্ছে না।
জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় আলোচনা শুরু হলেও ইয়েমেন সঙ্কটের রাজনৈতিক সমাধান পাওয়া কঠিন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সূত্র bcc

শাবানের মধ্য রজনী তথা শবে বরাতের করনীয় ও বর্জনীয় আমল

ইসলামিক:শাবানের মধ্য রজনী তথা শবে বরাতের করনীয়
ও বর্জনীয় আমল সমূহঃ
পূর্ন শাবান মাস রাসূল সাঃ বেশী বেশী
রোজা রাখতেন ও নেক আমল করতেন যেহেতু এ
মাসের আমল আল্লাহর কাছে পেশ করা হয়।
তাই শুধু শাবানের মধ্য রজনী নহে বরং পূর্ণ
শাবানের সকল দিনে রোজা রাখা ও রজনীতে
বেশী বেশী নামাজ পড়া উওম।
ﺭﻭﻱ ﺃﺳﺎﻣﺔ ﺑﻦ ﺯﻳﺪ ﻗﻠﺖ ﻳﺎ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﻟﻢ ﺍﺭﻙ ﺗﺼﻮﻡ ﺷﻬﺮﺍ ﻣﻦ
ﺍﻟﺸﻬﻮﺭ ﻛﻤﺎ ﺗﺼﻮﻡ ﻓﻲ ﺷﻌﺒﺎﻥ ﻗﺎﻝ ﺫﻟﻚ ﺷﻬﺮ ﺑﻴﻦ ﺭﺟﺐ ﻭﺭﻣﻀﺎﻥ
ﻳﻐﻔﻞ ﻋﻨﻪ ﻛﺜﻴﺮ ﻣﻦ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﻭﻫﻮ ﺷﻬﺮ ﺗﺮﻓﻊ ﻓﻴﻪ ﺍﻷﻋﻤﺎﻝ ﺍﻟﻲ ﺭﺏ
ﺍﻟﻌﺎﻟﻤﻴﻦ ﻓﺄﺣﺐ ﺃﻥ ﻳﺮﻓﻊ ﻋﻤﻠﻲ ﻭﺍﻧﺎ ﺻﺎﺋﻢ ‏( ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﻨﺴﺎﺋﻲ ﻭﺻﺤﺤﻪ
ﺍﻷﻟﺒﺎﻧﻲ )
উসামা রাঃ থেকে বর্নিত তিনি বলেন: রাসূল
সা কে বললামঃ আপনি শাবান মাসে এত
বেশী রোজা রাখেন যা অন্য কোন মাসে এত
রোজা রাখতে দেখিনি।তখন রাসূল সা
বললেন,রজব ও রমজানের মধ্যে এ মাস সম্পর্কে
মানুষ গাফিল থাকে, এমাসে আমল আল্লাহর
কাছে পেশ করা হয় অতএব আমি চাই আমার
আমল রোজা অবস্থায় আল্লাহর কাছে পেশ
করা হোক।( নাসাঈ)
মধ্য শাবান তথা শবে বরাতের দিন যে সকল
হাদীসে খাছ ভাবে রোজা রাখার ফযিলত
বর্নীত হয়েছে
সবগুলু অত্যন্ত দুর্বল সনদে বর্নীত হয়েছে । তবে
আইয়ামুল বিজ তথা প্রতি আরবী মাসের
13,14,15 তারিখ রোজা রাখা সুন্নাহ তাই এ
নিয়্যাতে রোজা রাখা উত্তম।
যে সকল হাদীসে শাবানের মধ্যরাতে জাগ্রত
হয়ে ইবাদতের ফযিলত বর্নীত হয়েছে তা
অত্যন্ত দুর্বল সনদে বর্নীত হয়েছে তবে একটা
হাদীস কোন কোন মুহাদ্দীস হাসান বলেছেনঃ
ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺍﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﻟﻴﻄﻠﻊ ﻋﻠﻰ ﺧﻠﻘﻪ ﻓﻲ
ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﻨﺼﻒ ﻣﻦ ﺷﻌﺒﺎﻥ ﻓﻴﻐﻔﺮ ﻟﺠﻤﻴﻊ ﺧﻠﻘﻪ ﺇﻻ ﻟﻤﺸﺮﻙ ﺃﻭ ﻣﺸﺎﺣﻦ
‏( ﺭﻭﺍﻩ ﺍﺑﻦ ﻣﺎﺟﻪ )
তাই শাবানের সকল রাতের মত শাবানের
মধ্যরাতে আমরা তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ব ,
তিলাওত করব তবে এ রাতকে খাছ করে নয় ।
যেহেতু আল্লাহ বছরের সকল রাতে নীচের
আকাশে এসে বলেনঃ তোমাদের কেহ আছে
কি তাওবা করবেঃ আমি তার তাওবা কবুল করব
( বোখারী)
বর্জনীয় আমল সমূহঃ
শবেবরাতের নিয়্যাতে আলাদা কোন নামাজ
নেই যার কোন দলিল নেই ।তেমনি হাজারী
নামাজ,একশত রাকাত সূরা ফাতিহা ইখলাছ
দিয়ে পড়া যা সম্পূর্ণ জাল হাদীস।
সে রাতে অগ্নী প্রজ্জ্বলিত করা,আগর বাতি
মোমবাতি জালিয়ে, আলোক সজ্জা করা,
আতশ বাজি করা, বিদাত যা বিধর্মীদের কাজ।
 শবেবরাতে রাতে আলাদা কবর যিয়ারত করা
যার কোন দলিল নেই । কবর যিয়ারত কোন
নির্ধারিত টাইমে করার আলাদা কোন ফযিলত
নেই।যে কোন সময় কবর যিয়ারত করা সুন্নাহ ।
হুজু দিয়ে কোরআন খতম করানোর কোন দলিল
নেই শরিয়তে । কোরআন আপনি নিজে সহীহ
নিয়্যাতে তিলাওত করবেন তাহলে ছওয়াব
হবে, শিফা হবে,দোয়া কবুল হবে। কিন্তু শাবান
মাস উপলক্ষে বা যে কোন সময় টাকা দিয়ে
হুজুর দিয়ে কোরআন খতম করানোর কোন দলিল
নেই যা রাসূল সাঃ সাহাবাগন কোন ইমামগন
কেহ করেননি। এটা কিছু লোকের ইনকামের
একটা উপায়। একা একা নিজে সূরা ফাতিহা
থেকে নাছ পর্যন্ত পড়লে খতম হয় ।দশজন মিলে
কোরআন প্ড়লে তা খতম হয়না।
শবেবরাত উপলক্ষে অনুষ্ঠান ,সভা, সেমিনার,
মিলাদ, কিয়াম ,সমবেত যিকির ,মসজিদে
সমবেত হওয়া, হামদ নাত, মাইকিং সমপূর্ন
বিভ্রান্ত আমল যা রাসূল সা সাহাবাগন কেহ
করেননি ,যার কোন দলিল নেই ।
সে রাতে আলাদা গোসল ,হালুয়া রূটি শিন্নি
ব্ন্টন, মানুষদেরকে দাওয়াত খাওয়ানো, বিদাত
যার কোন দলিল নেই ।কিছু লোক তাদের
রোজগারের জন্য এ পন্হা আবিষ্কার করেছে।
এ রাতকে ভাগ্য রজনী মনে করা মিথ্যাচার
ছাড়া কিছু নয় ।ভাগ্য রজনী লাইলাতুল কদর যা
কোরআনে আল্লাহ বলেছেন।
সূরা দোখানের আয়াত দিয়ে এ রাতে ওয়াজ
করে এ রাতের ফযিলত বর্ণনা করা চরম
মিথ্যাচার । সকল মূফাস্সিরদের মতে সূরা
দোখান লাইলাতুল কদরের বর্ণনা করে ।
কোরআন নাযিল হয়েছে লাইলাতুল কদরে
শবেবরাতে নয়।
ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻣﻦ ﻗﺎﻝ ﻓﻲ ﺍﻟﻘﺮﺃﻥ ﺑﺮﺃﻳﻪ
ﻓﻠﻴﺘﺒﺆ ﻣﻘﻌﺪﻩ ﻣﻦ ﺍﻟﻨﺎﺭ ‏( ﺻﺤﻴﺢ ﺍﻟﺠﺎﻣﻊ )
রাসূল সা বলেছেন যে মনগড়া কোরআনের
তাফসির করে সে যেন জাহান্নামে ঠিকানা
বানিয়ে নেয় ।
আল্লাহ আমাদেরকে কোরআন ও সহীহ
হাদীসের আলোকে আমলের তাওফিক দান
করুন ও সকল বিদাত ও মনগড়া আমল থেকে
বেচে থাকার তাওফিক দান করুন ।

১৪ দিন শেষ হলেও ‘হোম কোয়ারেন্টিনে’ থাকবেন খালেদা জিয়া

নির্ধারিত ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন শেষ হলেও করোনাভাইরাস পরিস্থিতির উন্নতি না পর্যন্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া হোম কোয়ারেন্টিনেই থাকবেন।

বৃহস্পতিবার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মোবাইলে গণমাধ্যমকর্মীদের এ কথা জানিয়েছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণে এখন সারা বিশ্বের যে অবস্থা এবং সারা দেশে এখন লকডাউনের মতো হয়ে গেছে। এইঅবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তো শতভাগ তাকে (খালেদা জিয়া) কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। সেখানে উনি সেইফ আছেন। এখন উনি সম্পূর্ণ হোমকোয়ারেন্টিন পরিবেশেই থাকবেন। আমরা আশা করি, এর মধ্যেই উনি ভালো থাকবেন। যখন পরিস্থিতির সমস্যাটা কমবে তথনই পরবর্তী অবস্থার কথা আমরা চিন্তা করব।

দলীয় প্রধান খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা তুলে ধরে তিনি বলেন, ম্যাডাম যথেষ্ট অসুস্থ। এখনও ইনফ্যাক্ট ইম্প্রুভমেন্ট উনারঅসুখের খুব বেশি হয় নাই। একটা মূল বিষয় ছিল, তাকে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার দাবি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে তারা বলেছেন, দেশের বাইরে যাওয়া যাবে না।

‘দেশের অভ্যন্তরে চিকিৎসা সেবার যে অবস্থা তাতে করে তো সব ডাক্তারাও সার্ভিস দিতে পারছেন না। যতটুকু পারছেন তার যে ব্যক্তিগতবিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা আছেন তারা তাকে দেখেছেন এবং একটা চিকিৎসা দিয়েছেন। আমরা আশা করি, এর মধ্যে উনি ভালোথাকবেন।’

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক টিমের সদস্য বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, ম্যাডামেরচিকিৎসার সব কিছু লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান তত্ত্বাবধায়ন করছেন। আজকে(বৃহস্পতিবার) উনার ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন শেষ হচ্ছে। এখন সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পরিবারের সদস্যরা তার সঙ্গে দেখা-সাক্ষাতকরতে পারবেন।

গত ২৫ মার্চ নির্বাহী আদেশে ৬ মাস সাজা স্থগিত রেখে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয় সরকার। সেদিন বিকাল ৫ টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবমেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল থেকে মুক্তি পেয়ে অসুস্থ খালেদা জিয়া গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’য় আসেন।

‘ফিরোজা’র দোতলায় খালেদা জিয়া কোয়ারেন্টিনে আছেন। সঙ্গে নার্সসহ কয়েকজন আছেন। এই ১৪ দিন কেউ নীচে নামেননি বলে জানান তার ব্যক্তিগত এই চিকিৎসক।

৭৫ বছর বয়সী খালেদা জিয়া রিউমাটয়েড আর্থারাইটিস, ডায়াবেটিস, চোখ ও দাঁতের নানা রোগে ভুগছেন।

অধ্যাপক জাহিদ বলেন, দীর্ঘ দুই বছরের বেশি সময় ধরে নির্জন কারাবাস এবং পর্যাপ্ত চিকিৎসা না হওয়া কারণে ম্যাডামের শারীরিক অবস্থাখুব খারাপ পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে। হাত-পায়ে আর্থারাইটিজের প্রচণ্ড ব্যথার কারণে উনি ভীষণ কষ্ট পাচ্ছেন। এই ব্যথা উপশমেরফিজিও-থেরাপি দেয়া হচ্ছে। উনার ডায়াবেটিক এখনও যথাযথ নিয়ন্ত্রণে আসেনি। উনাকে সম্পূর্ণ সুস্থ করে তুলতে দীর্ঘ এবংউন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন হবে।

‘ফিরোজা’য় গেটে পাহারারত নিরাপত্তাকর্মীরা জানান, ম্যাডামের বাসায় প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত করা হয়েছে। শুধুমাত্র চিকিৎসক টিমেরসদস্যবৃন্দ ও কয়েকজন নিকট আত্বীয় স্বজন আসছেন।

Wednesday, 8 April 2020

পবিত্র শবে বরাত আগামীকাল

ইসলামিক সংবা:
‘শব’ ফারসি শব্দ। অর্থ রাত বা রজনী। বরাত
শব্দটিও মূলে ফারসি। অর্থ ভাগ্য। দু’শব্দের
একত্রে অর্থ হবে, ভাগ্য-রজনী। বরাত শব্দটি
আরবি ভেবে অনেকেই ভুল করে থাকেন। কারণ
‘বরাত’ বলতে আরবি ভাষায় কোন শব্দ নেই।
‘বারায়াত’কে যদি আরবি শব্দ ধরা হয় তাহলে
এর অর্থ হচ্ছে সম্পর্কচ্ছেদ, পরোক্ষ অর্থে
মুক্তি। যেমন কুর’আন মাজীদে সূরা বারায়াত
রয়েছে যা সূরা তাওবা নামেও পরিচিত।
ইরশাদ হয়েছেঃ
ﺑَﺮَﺍﺀَﺓٌ ﻣِّﻦَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻭَﺭَﺳُﻮﻟِﻪِ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻋَﺎﻫَﺪﺗُّﻢ ﻣِّﻦَ ﺍﻟْﻤُﺸْﺮِﻛِﻴﻦَ ‏[ ٩ : ١ ]
সম্পর্কচ্ছেদ করা হল আল্লাহ ও তাঁর রসূলের
পক্ষ থেকে সেই মুশরিকদের সাথে, যাদের
সাথে তোমরা চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলে। (সূরা
তাওবা, ১)
এখানে বারায়াতের অর্থ হল সম্পর্ক ছিন্ন
করা। ‘বারায়াত’ মুক্তি অর্থেও আল-কুর’আনে
এসেছে যেমনঃ
ﺃَﻛُﻔَّﺎﺭُﻛُﻢْ ﺧَﻴْﺮٌ ﻣِّﻦْ ﺃُﻭﻟَٰﺌِﻜُﻢْ ﺃَﻡْ ﻟَﻜُﻢ ﺑَﺮَﺍﺀَﺓٌ ﻓِﻲ ﺍﻟﺰُّﺑُﺮِ ‏[ ٥٤ : ٤٣ ]
তোমাদের মধ্যকার কাফেররা কি তাদের
চাইতে শ্রেষ্ঠ ? না তোমাদের মুক্তির সনদপত্র
রয়েছে কিতাবসমূহে? (সূরা কামার, ৪৩)
আর বারায়াত শব্দটি যদি ফার্সি শব্দ ধরা হয়
তাহলে উহার অর্থ হবে সৌভাগ্য। অতএব শবে
বরাত শব্দটার অর্থ দাঁড়ায় মুক্তির রজনী,
সম্পর্ক ছিন্ন করার রজনী। অথবা সৌভাগ্যের
রাত, যদি ‘বরাত’ শব্দটিকে ফার্সি শব্দ ধরা
হয়। শবে বরাত শব্দটিকে যদি আরবিতে তর্জমা
করতে চান তাহলে বলতে হবে ‘লাইলাতুল
বারায়াত’।
এখানে বলে রাখা ভালো যে এমন অনেক শব্দ
আছে যার রুপ বা উচ্চারন আরবিও ফার্সি
ভাষায় একই রকম, কিন্তু অর্থ ভিন্ন। যেমন-
‘গোলাম’ শব্দটি উভয় ভাষায় একই রকম লিখা ও
উচ্চারন করা হয়। আরবিতে অর্থ কিশোর আর
ফার্সিতে দাস। সার কথা হল ‘বারায়াত’
শব্দটিকে আরবি শব্দ ধরা হলে উহার অর্থ
সম্পর্কচ্ছেদ বা মুক্তি। আর ফার্সি শব্দ ধরা
হলে উহার অর্থ সৌভাগ্য।
আল-কুর’আনে শবে বরাতের কোন উল্লেখ
নেই
শবে বরাত বলুন আর লাইলাতুল বারায়াত বলুন
কোন আকৃতিতে শব্দটি কুর’আন মাজিদে খুঁজে
পাবেন না। সত্য কথাটাকে খুঁজে পাবেন না,
সত্য কথাটাকে সহজভাবে সহজভাবে বলতে
গেলে বলা যায় পবিত্র কুর’আন মাজিদে শবে
বরাতের কোন আলোচনা নেই। সরাসরি তো
দূরের কথা আকার ইংগিতেও নেই।
অনেককে দেখা যায় শবে বরাতের গুরুত্ব
আলোচনা করতে যেয়ে সূরা দু’খানের প্রথম
চারটি আয়াত পাঠ করেন। আয়াতসমূহ হলঃ
ﺣﻢ ‏[ ٤٤ : ١ ] হা-মীম।
ﻭَﺍﻟْﻜِﺘَﺎﺏِ ﺍﻟْﻤُﺒِﻴﻦِ ‏[ ٤٤ : ٢ ] শপথ সুস্পষ্ট কিতাবের।
ﺇِﻧَّﺎ ﺃَﻧﺰَﻟْﻨَﺎﻩُ ﻓِﻲ ﻟَﻴْﻠَﺔٍ ﻣُّﺒَﺎﺭَﻛَﺔٍۚ ﺇِﻧَّﺎ ﻛُﻨَّﺎ ﻣُﻨﺬِﺭِﻳﻦَ ‏[ ٤٤ : ٣ ] আমি
একে নাযিল করেছি। এক বরকতময় রাতে,
নিশ্চয় আমি সতর্ককারী।
ﻓِﻴﻬَﺎ ﻳُﻔْﺮَﻕُ ﻛُﻞُّ ﺃَﻣْﺮٍ ﺣَﻜِﻴﻢٍ ‏[ ٤٤ : ٤ ] এ রাতে প্রত্যেক
প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় স্থিরীকৃত হয়।
শবে বরাত পন্থী আলেম উলামারা এখানে
বরকতময় রাত বলতে ১৫ শাবানের রাতকে
বুঝিয়ে থাকেন। আমি এখানে স্পষ্টভাবেই বলব
যে, যারা এখানে বরকতময় রাতের অর্থ ১৫
শাবানের রাতকে বুঝিয়ে থাকেন তারা এমন
বড় ভুল করেন যা আল্লাহ্র কালাম বিকৃত করার
মত অপরাধ। কারনঃ
(১) কুর’আন মাজিদের এই আয়াতের তাফসীর বা
ব্যাখ্যা সূরা আল-কদর দ্বারা করা হয়। সেই
সূরায় আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন বলেনঃ
ﺇِﻧَّﺎ ﺃَﻧﺰَﻟْﻨَﺎﻩُ ﻓِﻲ ﻟَﻴْﻠَﺔِ ﺍﻟْﻘَﺪْﺭِ ‏[ ٩٧ : ١ ] আমি একে নাযিল
করেছি লাইলাতুল-কদরে।
ﻭَﻣَﺎ ﺃَﺩْﺭَﺍﻙَ ﻣَﺎ ﻟَﻴْﻠَﺔُ ﺍﻟْﻘَﺪْﺭِ ‏[ ٩٧ : ٢ ] লাইলাতুল-কদর সম্বন্ধে
আপনি কি জানেন?
ﻟَﻴْﻠَﺔُ ﺍﻟْﻘَﺪْﺭِ ﺧَﻴْﺮٌ ﻣِّﻦْ ﺃَﻟْﻒِ ﺷَﻬْﺮٍ ‏[ ٩٧ : ٣ ] লাইলাতুল-কদর হল
এক হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ।
ﺗَﻨَﺰَّﻝُ ﺍﻟْﻤَﻠَﺎﺋِﻜَﺔُ ﻭَﺍﻟﺮُّﻭﺡُ ﻓِﻴﻬَﺎ ﺑِﺈِﺫْﻥِ ﺭَﺑِّﻬِﻢ ﻣِّﻦ ﻛُﻞِّ ﺃَﻣْﺮٍ ‏[ ٩٧ : ٤ ] এতে
প্রত্যেক কাজের জন্যে ফেরেশতাগণ ও রূহ
অবতীর্ণ হয় তাদের পালনকর্তার নির্দেশক্রমে।
ﺳَﻠَﺎﻡٌ ﻫِﻲَ ﺣَﺘَّﻰٰ ﻣَﻄْﻠَﻊِ ﺍﻟْﻔَﺠْﺮِ ‏[ ٩٧ : ٥ ] এটা নিরাপত্তা, যা
ফজরের উদয় পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।
অতএব, বরকতময় রাত হল লাইলাতুল কদর।
লাইলাতুল বারায়াত নয়। সূরা দুখানের প্রথম
সাত আয়াতের ব্যাখ্যা হল এই সূরা আল-কদর।
আর এ ধরনের ব্যাখ্যা অর্থাৎ আল-কুর’আনের
এক আয়াতের ব্যাখ্যা অন্য আয়াত দ্বারা করা
হল সর্বোত্তম ব্যাখ্যা।
(২) সূরা দুখানের লাইলাতুল মুবারাকের অর্থ
যদি শবে বরাত হয় তাহলে এ আয়াতের অর্থ
দাঁড়ায় আল কুর’আন শাবান মাসের শবে বরাতে
নাজিল হয়েছে। অথচ আমরা সকলে জানি আল-
কুর’আন নাজিল হয়েছে রামাজান মাসের
লাইলাতুল কদরে। যেমন সূরা বাকারার ১৮৫ নং
আয়াতে আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন বলেন
ﺷَﻬْﺮُ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﺃُﻧﺰِﻝَ ﻓِﻴﻪِ ﺍﻟْﻘُﺮْﺁﻥُ রমযান মাসই হল সে
মাস, যাতে নাযিল করা হয়েছে কোরআন।
(৩) অধিকাংশ মুফাসসিরে কিরামের মত হল
উক্ত আয়াতে বরকতময় রাত বলতে লাইলাতুল
কদরকেই বুঝানো হয়েছে। শুধু মাত্র তাবেয়ী
ইকরামা (রহ.) এর একটা মত উল্লেখ করে বলা
হয় যে, তিনি বলেছেন বরকতময় রাত বলতে
শাবান মাসের ১৫ তারিখের রাতকেও বুঝানো
যেতে পারে।
তিনি যদি এটা বলে থাকেন তাহলে এটা তার
ব্যক্তিগত অভিমত। যা কুর’আন ও হাদিসের
বিরোধী হওয়ার কারণে পরিত্যাজ্য। এ
বরকতময় রাতের দ্বারা উদ্দেশ্য যদি শবে বরাত
হয় তাহলে শবে কদর অর্থ নেওয়া চলবে না।
(৪) উক্ত আয়াতে বরকতময় রাতের ব্যাখ্যা শবে
বরাত করা হল তাফসীর বির-রায় (মনগড়া
ব্যাখ্যা), আর বরকতময় রাতের ব্যাখ্যা
লাইলাতুল কদর দ্বারা করা হল কুর’আন ও হাদিস
সম্মত তাফসীর। সকলেই জানেন কুর’আন ও
হাদিস সম্মত ব্যাখ্যার উপস্থিতিতে মনগড়া
ব্যাখ্যা (তাফসীর বির-রায়) গ্রহণ করার কোন
সুযোগ নেই।
(৫) সূরা দুখানের ৪ নং আয়াত ও সূরা কদরের ৪
নং আয়াত মিলিয়ে দেখলে স্পষ্ট হয়ে যায়
যে, বরকতময় রাত বলতে লাইলাতুল কদরকেই
বুঝানো হয়েছে। সাহাবী ইবনে আব্বাস (রাঃ),
ইবনে কাসির, কুরতুবি প্রমুখ মুফাসসিরে কিরাম
এ কথাই জোর দিয়ে বলেছেন এবং সূরা
দুখানের ‘লাইলাতুম মুবারাকা’র অর্থ শবে
বরাত নেওয়াকে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
তাফসীরে মায়ারেফুল কুরআন দ্রষ্টব্য)
ইমাম কুরতুবি (রহঃ) তাঁর তাফসীরে বলেছেনঃ
“কোন কোন আলেমের রাতে ‘লাইলাতুম
মুবারাকাহ’ দ্বারা উদ্দেশ্য হল মধ্য শাবানের
রাত (শবে বরাত)।
কিন্তু এটা একটা বাতিল ধারণা।” অতএব এ
আয়াতে ‘লাইলাতুম মুবারাকাহ’ এর অর্থ
লাইলাতুল কদর। শাবান মাসের পনের তারিখ
রাত নয়।
(৬) ইকরামা (রঃ) বরকতময় রজনীর যে ব্যাখ্যা
শাবানের ১৫ তারিখ দ্বারা করেছেন তা ভুল
হওয়া সত্ত্বেও প্রচার করতে হবে এমন কোন
নিয়ম-কানুন নেই। বরং তা প্রত্যাখ্যান করাই
হল হকের দাবী। তিনি যেমন ভুলের উর্ধে নন,
তেমনি যারা তাঁর থেকে বর্ণনা করেছেন
তারা ভুল শুনে থাকতে পারেন অথবা কোন
উদ্দেশ্য নিয়ে বানোয়াট বর্ণনা দেওয়াও
অসম্ভব নয়।
(৭) শবে বরাতের গুরুত্ব সূরা দুখানের উক্ত
আয়াত উল্লেখ করার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে
আকিদাহ বদ্ধমূল হয়ে গেছে যে, শবে বরাতে
সৃষ্টিকুলের হায়াত-মাউত, রিজিক-দৌলত
সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় ও লিপিবদ্ধ করা
হয়। আর শবে বরাত উদযাপনকারীদের শতকরা
৯৯ জনের বেশি এ ধারণাই পোষণ করেন। তারা
এর উপর ভিত্তি করে লাইলাতুল কদরের চেয়ে
১৫ শাবানের রাতকে বেশি গুরুত্ব দেয়। অথচ
কুর’আন ও হাদিসের আলোকে এ বিষয়গুলি
লাইলাতুল কদরের সাথে সম্পর্কিত। তাই যারা
শবে কদরের গুরুত্ব বুঝাতে উক্ত আয়াত
উপস্থাপন করেন তারা মানুষকে সঠিক ইসলামী
আকিদাহ থেকে দূরে সরানোর কাজে লিপ্ত,
যদিও মনে –প্রাণে তারা তা ইচ্ছা করেন না।
(৮) ইমাম আবু বকর আল জাসসাস তাঁর আল-
জামে লি আহকামিল কুর’আন তাফসীর গ্রন্থে
লাইলাতুন মুবারাকাহ দ্বারা মধ্য শাবানের
রাত উদ্দেশ্য করা ঠিক নয় বলে বিস্তারিত
আলোচনা করার পর বলেনঃ
লাইলাতুল কদরের ৪ টি নাম রয়েছে, তা হলঃ
লাইলাতুল কদর, লাইলাতুল মুবারাকাহ,
লাইলাতুল বারাআত ও লাইলাতুস সিক।
(আল জামে লি আহকামিল কুরআন, সূরা আদ-
দুখানের তাফসীর দ্রষ্টব্য)
লাইলাতুল বারাআত হল লাইলাতুল কদরের
একটি নাম। শাবান মাসের ১৫ তারিখের
রাতের নাম নয়। ইমাম শাওকানি (রহঃ) তাঁর
তাফসীর ফতহুল কাদিরে একই কথাই লিখেছেন।
(তাফসীর ফাতহুল কাদির: ইমাম শাওকানি
দ্রষ্টব্য)
এ সকল বিষয় জেনে বুঝেও যারা ‘লাইলাতুল
মুবারাকা’র অর্থ করবেন শবে বরাত, তারা
সাধারণ মানুষের গোমরাহ করা এবং আল্লাহ্র
কালামের অপব্যাখ্যা করার দায়িত্ব এড়াতে
পারবেন‘শব’ ফারসি শব্দ। অর্থ রাত বা রজনী। বরাত
শব্দটিও মূলে ফারসি। অর্থ ভাগ্য। দু’শব্দের
একত্রে অর্থ হবে, ভাগ্য-রজনী। বরাত শব্দটি
আরবি ভেবে অনেকেই ভুল করে থাকেন। কারণ
‘বরাত’ বলতে আরবি ভাষায় কোন শব্দ নেই।
‘বারায়াত’কে যদি আরবি শব্দ ধরা হয় তাহলে
এর অর্থ হচ্ছে সম্পর্কচ্ছেদ, পরোক্ষ অর্থে
মুক্তি। যেমন কুর’আন মাজীদে সূরা বারায়াত
রয়েছে যা সূরা তাওবা নামেও পরিচিত।
ইরশাদ হয়েছেঃ
ﺑَﺮَﺍﺀَﺓٌ ﻣِّﻦَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻭَﺭَﺳُﻮﻟِﻪِ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻋَﺎﻫَﺪﺗُّﻢ ﻣِّﻦَ ﺍﻟْﻤُﺸْﺮِﻛِﻴﻦَ ‏[ ٩ : ١ ]
সম্পর্কচ্ছেদ করা হল আল্লাহ ও তাঁর রসূলের
পক্ষ থেকে সেই মুশরিকদের সাথে, যাদের
সাথে তোমরা চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলে। (সূরা
তাওবা, ১)
এখানে বারায়াতের অর্থ হল সম্পর্ক ছিন্ন
করা। ‘বারায়াত’ মুক্তি অর্থেও আল-কুর’আনে
এসেছে যেমনঃ
ﺃَﻛُﻔَّﺎﺭُﻛُﻢْ ﺧَﻴْﺮٌ ﻣِّﻦْ ﺃُﻭﻟَٰﺌِﻜُﻢْ ﺃَﻡْ ﻟَﻜُﻢ ﺑَﺮَﺍﺀَﺓٌ ﻓِﻲ ﺍﻟﺰُّﺑُﺮِ ‏[ ٥٤ : ٤٣ ]
তোমাদের মধ্যকার কাফেররা কি তাদের
চাইতে শ্রেষ্ঠ ? না তোমাদের মুক্তির সনদপত্র
রয়েছে কিতাবসমূহে? (সূরা কামার, ৪৩)
আর বারায়াত শব্দটি যদি ফার্সি শব্দ ধরা হয়
তাহলে উহার অর্থ হবে সৌভাগ্য। অতএব শবে
বরাত শব্দটার অর্থ দাঁড়ায় মুক্তির রজনী,
সম্পর্ক ছিন্ন করার রজনী। অথবা সৌভাগ্যের
রাত, যদি ‘বরাত’ শব্দটিকে ফার্সি শব্দ ধরা
হয়। শবে বরাত শব্দটিকে যদি আরবিতে তর্জমা
করতে চান তাহলে বলতে হবে ‘লাইলাতুল
বারায়াত’।
এখানে বলে রাখা ভালো যে এমন অনেক শব্দ
আছে যার রুপ বা উচ্চারন আরবিও ফার্সি
ভাষায় একই রকম, কিন্তু অর্থ ভিন্ন। যেমন-
‘গোলাম’ শব্দটি উভয় ভাষায় একই রকম লিখা ও
উচ্চারন করা হয়। আরবিতে অর্থ কিশোর আর
ফার্সিতে দাস। সার কথা হল ‘বারায়াত’
শব্দটিকে আরবি শব্দ ধরা হলে উহার অর্থ
সম্পর্কচ্ছেদ বা মুক্তি। আর ফার্সি শব্দ ধরা
হলে উহার অর্থ সৌভাগ্য।
আল-কুর’আনে শবে বরাতের কোন উল্লেখ
নেই
শবে বরাত বলুন আর লাইলাতুল বারায়াত বলুন
কোন আকৃতিতে শব্দটি কুর’আন মাজিদে খুঁজে
পাবেন না। সত্য কথাটাকে খুঁজে পাবেন না,
সত্য কথাটাকে সহজভাবে সহজভাবে বলতে
গেলে বলা যায় পবিত্র কুর’আন মাজিদে শবে
বরাতের কোন আলোচনা নেই। সরাসরি তো
দূরের কথা আকার ইংগিতেও নেই।
অনেককে দেখা যায় শবে বরাতের গুরুত্ব
আলোচনা করতে যেয়ে সূরা দু’খানের প্রথম
চারটি আয়াত পাঠ করেন। আয়াতসমূহ হলঃ
ﺣﻢ ‏[ ٤٤ : ١ ] হা-মীম।
ﻭَﺍﻟْﻜِﺘَﺎﺏِ ﺍﻟْﻤُﺒِﻴﻦِ ‏[ ٤٤ : ٢ ] শপথ সুস্পষ্ট কিতাবের।
ﺇِﻧَّﺎ ﺃَﻧﺰَﻟْﻨَﺎﻩُ ﻓِﻲ ﻟَﻴْﻠَﺔٍ ﻣُّﺒَﺎﺭَﻛَﺔٍۚ ﺇِﻧَّﺎ ﻛُﻨَّﺎ ﻣُﻨﺬِﺭِﻳﻦَ ‏[ ٤٤ : ٣ ] আমি
একে নাযিল করেছি। এক বরকতময় রাতে,
নিশ্চয় আমি সতর্ককারী।
ﻓِﻴﻬَﺎ ﻳُﻔْﺮَﻕُ ﻛُﻞُّ ﺃَﻣْﺮٍ ﺣَﻜِﻴﻢٍ ‏[ ٤٤ : ٤ ] এ রাতে প্রত্যেক
প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় স্থিরীকৃত হয়।
শবে বরাত পন্থী আলেম উলামারা এখানে
বরকতময় রাত বলতে ১৫ শাবানের রাতকে
বুঝিয়ে থাকেন। আমি এখানে স্পষ্টভাবেই বলব
যে, যারা এখানে বরকতময় রাতের অর্থ ১৫
শাবানের রাতকে বুঝিয়ে থাকেন তারা এমন
বড় ভুল করেন যা আল্লাহ্র কালাম বিকৃত করার
মত অপরাধ। কারনঃ
(১) কুর’আন মাজিদের এই আয়াতের তাফসীর বা
ব্যাখ্যা সূরা আল-কদর দ্বারা করা হয়। সেই
সূরায় আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন বলেনঃ
ﺇِﻧَّﺎ ﺃَﻧﺰَﻟْﻨَﺎﻩُ ﻓِﻲ ﻟَﻴْﻠَﺔِ ﺍﻟْﻘَﺪْﺭِ ‏[ ٩٧ : ١ ] আমি একে নাযিল
করেছি লাইলাতুল-কদরে।
ﻭَﻣَﺎ ﺃَﺩْﺭَﺍﻙَ ﻣَﺎ ﻟَﻴْﻠَﺔُ ﺍﻟْﻘَﺪْﺭِ ‏[ ٩٧ : ٢ ] লাইলাতুল-কদর সম্বন্ধে
আপনি কি জানেন?
ﻟَﻴْﻠَﺔُ ﺍﻟْﻘَﺪْﺭِ ﺧَﻴْﺮٌ ﻣِّﻦْ ﺃَﻟْﻒِ ﺷَﻬْﺮٍ ‏[ ٩٧ : ٣ ] লাইলাতুল-কদর হল
এক হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ।
ﺗَﻨَﺰَّﻝُ ﺍﻟْﻤَﻠَﺎﺋِﻜَﺔُ ﻭَﺍﻟﺮُّﻭﺡُ ﻓِﻴﻬَﺎ ﺑِﺈِﺫْﻥِ ﺭَﺑِّﻬِﻢ ﻣِّﻦ ﻛُﻞِّ ﺃَﻣْﺮٍ ‏[ ٩٧ : ٤ ] এতে
প্রত্যেক কাজের জন্যে ফেরেশতাগণ ও রূহ
অবতীর্ণ হয় তাদের পালনকর্তার নির্দেশক্রমে।
ﺳَﻠَﺎﻡٌ ﻫِﻲَ ﺣَﺘَّﻰٰ ﻣَﻄْﻠَﻊِ ﺍﻟْﻔَﺠْﺮِ ‏[ ٩٧ : ٥ ] এটা নিরাপত্তা, যা
ফজরের উদয় পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।
অতএব, বরকতময় রাত হল লাইলাতুল কদর।
লাইলাতুল বারায়াত নয়। সূরা দুখানের প্রথম
সাত আয়াতের ব্যাখ্যা হল এই সূরা আল-কদর।
আর এ ধরনের ব্যাখ্যা অর্থাৎ আল-কুর’আনের
এক আয়াতের ব্যাখ্যা অন্য আয়াত দ্বারা করা
হল সর্বোত্তম ব্যাখ্যা।
(২) সূরা দুখানের লাইলাতুল মুবারাকের অর্থ
যদি শবে বরাত হয় তাহলে এ আয়াতের অর্থ
দাঁড়ায় আল কুর’আন শাবান মাসের শবে বরাতে
নাজিল হয়েছে। অথচ আমরা সকলে জানি আল-
কুর’আন নাজিল হয়েছে রামাজান মাসের
লাইলাতুল কদরে। যেমন সূরা বাকারার ১৮৫ নং
আয়াতে আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন বলেন
ﺷَﻬْﺮُ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﺃُﻧﺰِﻝَ ﻓِﻴﻪِ ﺍﻟْﻘُﺮْﺁﻥُ রমযান মাসই হল সে
মাস, যাতে নাযিল করা হয়েছে কোরআন।
(৩) অধিকাংশ মুফাসসিরে কিরামের মত হল
উক্ত আয়াতে বরকতময় রাত বলতে লাইলাতুল
কদরকেই বুঝানো হয়েছে। শুধু মাত্র তাবেয়ী
ইকরামা (রহ.) এর একটা মত উল্লেখ করে বলা
হয় যে, তিনি বলেছেন বরকতময় রাত বলতে
শাবান মাসের ১৫ তারিখের রাতকেও বুঝানো
যেতে পারে।
তিনি যদি এটা বলে থাকেন তাহলে এটা তার
ব্যক্তিগত অভিমত। যা কুর’আন ও হাদিসের
বিরোধী হওয়ার কারণে পরিত্যাজ্য। এ
বরকতময় রাতের দ্বারা উদ্দেশ্য যদি শবে বরাত
হয় তাহলে শবে কদর অর্থ নেওয়া চলবে না।
(৪) উক্ত আয়াতে বরকতময় রাতের ব্যাখ্যা শবে
বরাত করা হল তাফসীর বির-রায় (মনগড়া
ব্যাখ্যা), আর বরকতময় রাতের ব্যাখ্যা
লাইলাতুল কদর দ্বারা করা হল কুর’আন ও হাদিস
সম্মত তাফসীর। সকলেই জানেন কুর’আন ও
হাদিস সম্মত ব্যাখ্যার উপস্থিতিতে মনগড়া
ব্যাখ্যা (তাফসীর বির-রায়) গ্রহণ করার কোন
সুযোগ নেই।
(৫) সূরা দুখানের ৪ নং আয়াত ও সূরা কদরের ৪
নং আয়াত মিলিয়ে দেখলে স্পষ্ট হয়ে যায়
যে, বরকতময় রাত বলতে লাইলাতুল কদরকেই
বুঝানো হয়েছে। সাহাবী ইবনে আব্বাস (রাঃ),
ইবনে কাসির, কুরতুবি প্রমুখ মুফাসসিরে কিরাম
এ কথাই জোর দিয়ে বলেছেন এবং সূরা
দুখানের ‘লাইলাতুম মুবারাকা’র অর্থ শবে
বরাত নেওয়াকে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
তাফসীরে মায়ারেফুল কুরআন দ্রষ্টব্য)
ইমাম কুরতুবি (রহঃ) তাঁর তাফসীরে বলেছেনঃ
“কোন কোন আলেমের রাতে ‘লাইলাতুম
মুবারাকাহ’ দ্বারা উদ্দেশ্য হল মধ্য শাবানের
রাত (শবে বরাত)।
কিন্তু এটা একটা বাতিল ধারণা।” অতএব এ
আয়াতে ‘লাইলাতুম মুবারাকাহ’ এর অর্থ
লাইলাতুল কদর। শাবান মাসের পনের তারিখ
রাত নয়।
(৬) ইকরামা (রঃ) বরকতময় রজনীর যে ব্যাখ্যা
শাবানের ১৫ তারিখ দ্বারা করেছেন তা ভুল
হওয়া সত্ত্বেও প্রচার করতে হবে এমন কোন
নিয়ম-কানুন নেই। বরং তা প্রত্যাখ্যান করাই
হল হকের দাবী। তিনি যেমন ভুলের উর্ধে নন,
তেমনি যারা তাঁর থেকে বর্ণনা করেছেন
তারা ভুল শুনে থাকতে পারেন অথবা কোন
উদ্দেশ্য নিয়ে বানোয়াট বর্ণনা দেওয়াও
অসম্ভব নয়।
(৭) শবে বরাতের গুরুত্ব সূরা দুখানের উক্ত
আয়াত উল্লেখ করার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে
আকিদাহ বদ্ধমূল হয়ে গেছে যে, শবে বরাতে
সৃষ্টিকুলের হায়াত-মাউত, রিজিক-দৌলত
সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় ও লিপিবদ্ধ করা
হয়। আর শবে বরাত উদযাপনকারীদের শতকরা
৯৯ জনের বেশি এ ধারণাই পোষণ করেন। তারা
এর উপর ভিত্তি করে লাইলাতুল কদরের চেয়ে
১৫ শাবানের রাতকে বেশি গুরুত্ব দেয়। অথচ
কুর’আন ও হাদিসের আলোকে এ বিষয়গুলি
লাইলাতুল কদরের সাথে সম্পর্কিত। তাই যারা
শবে কদরের গুরুত্ব বুঝাতে উক্ত আয়াত
উপস্থাপন করেন তারা মানুষকে সঠিক ইসলামী
আকিদাহ থেকে দূরে সরানোর কাজে লিপ্ত,
যদিও মনে –প্রাণে তারা তা ইচ্ছা করেন না।
(৮) ইমাম আবু বকর আল জাসসাস তাঁর আল-
জামে লি আহকামিল কুর’আন তাফসীর গ্রন্থে
লাইলাতুন মুবারাকাহ দ্বারা মধ্য শাবানের
রাত উদ্দেশ্য করা ঠিক নয় বলে বিস্তারিত
আলোচনা করার পর বলেনঃ
লাইলাতুল কদরের ৪ টি নাম রয়েছে, তা হলঃ
লাইলাতুল কদর, লাইলাতুল মুবারাকাহ,
লাইলাতুল বারাআত ও লাইলাতুস সিক।
(আল জামে লি আহকামিল কুরআন, সূরা আদ-
দুখানের তাফসীর দ্রষ্টব্য)
লাইলাতুল বারাআত হল লাইলাতুল কদরের
একটি নাম। শাবান মাসের ১৫ তারিখের
রাতের নাম নয়। ইমাম শাওকানি (রহঃ) তাঁর
তাফসীর ফতহুল কাদিরে একই কথাই লিখেছেন।
(তাফসীর ফাতহুল কাদির: ইমাম শাওকানি
দ্রষ্টব্য)
এ সকল বিষয় জেনে বুঝেও যারা ‘লাইলাতুল
মুবারাকা’র অর্থ করবেন শবে বরাত, তারা
সাধারণ মানুষের গোমরাহ করা এবং আল্লাহ্র
কালামের অপব্যাখ্যা করার দায়িত্ব এড়াতে
পারবেন না।